যে গ্রামে ছেলেমেয়েদের বিয়ে হয়না
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
গ্রামে পরিণত বয়সের বিবাহযোগ্য পাত্রপাত্রী থাকলেও তাদের বিয়ে হয় না। আর এই বিয়ে না হওয়ার পেছনে একটিই কারণ, খাবার পানি। কী, ঠাট্টা করছি ভাবছেন? না, মোটেও না। সত্যিই পানির জন্য বিয়ে নামক দিল্লিকা লাড্ডু খেতে পারছেন না গ্রামের যুবক-যুবতিরা। তাহলে পানিরই বা কী দোষ?
যত দোষ সব পানিরই। কারণ এই পানির বদগুণেই এ গ্রামের ছেলেমেয়েদের শৈশবের পর কৈশোরে পা দিতে না দিতেই বুড়োদের মতো দাঁত পড়ে যায়। সেই দাঁত আর গজায় না। ফোকলা পাত্রপাত্রীকে কে ই বা বিয়ে করবে বলুন?
ভারতের বিহারের হাবলি খড়গপুর বিভাগের রামনকাবাদের পূর্বি খাড়িয়া গ্রামের অবস্থাটা বর্তমানে এতটাই শোচনীয় যে, এই গ্রামমুখো হতে চান না ভিনগ্রামের মানুষ। ফলে কার্যত একঘরে গ্রামবাসী। জানা গেছে, ইতিমধ্যে প্রায় ৫০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সব বয়সের মানুষ রয়েছেন।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ফ্লোরাইড মিশ্রিত পানি খেয়ে দাঁত ঝরা বা অল্প বয়সে বুড়িয়ে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দিচ্ছে। ২০১০ সালে মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার গ্রামে একটি পানীয় জল প্রকল্পের সূচনা করেন। কিন্তু তা কাজে লাগেনি। পরে ৩২ কোটি টাকা খরচ করে ফ্লোরাইড মুক্ত জল-প্রকল্পের কাজ হাতে দেয় সরকার। কিন্তু সেই কাজও অসম্পূর্ণ রেখে চলে যায় ২ সংস্থা।
ফলে রোগের প্রকোপ বাড়তে থাকে। বর্তমানে ফ্লোরাইড মুক্ত জলের জন্য সরকার মুঙ্গের জেলায় ৫টি ওয়াটার ATM বসিয়েছে। যার মধ্যে ২টি এই গ্রামে বসানো হয়েছে। গ্রামবাসী ৪ টাকার বিনিময়ে ২০ লিটার পানি পান।
তবে ইতিমধ্যেই একটি ATM খারাপ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসী। তবে পানি সমস্যার আপাতত একটা সমাধান হলেও যারা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা ক্ষোভ চেপে রাখতে পারেননি। কারণ, রোগের কবলে পড়ে তাঁদের বাকি জীবনটাই যে নষ্ট হতে বসেছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/আরএম